get-fans-468x60

Tuesday, June 21, 2011

কার্গুজারী

চিল্লার জন্য আল্লাহ আমাকে কবুল করেন

আমার জীবনের পরিবর্তনের পিছনে বিশ্ব ইজতেমা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বলে আমি মনে করি। লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে এই ইজমেতমায়। প্রত্যেক সাধারণ মুসলমানের মন পরিবর্তনে প্রভাব ফেলে এই আয়োজন। কেননা সারা বিশ্ব থেকে অল্লাহর প্রিয় বান্দাদের আগমন ঘটে । ধনী গরিব ভেদাভেদ ভুলে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির সঙ্গে সকলই ত্যাগ স্বীকার করে এক মজমায় জমা হয়।  আল্লাহর কাছে অসংখ্য শুকরিয় জানাই যিনি আমাকে এ দাওয়াতি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন।
এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন ভাই মুহাম্মাদ আনেয়ার হুসাইন। বর্তমানে তিনি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। ডিগ্রি পাশ করে বেকার সময় কাটাচ্ছিলেন। পাশাপাশি চাকরি খুঁজছিলেন। কিন্তু কোন কুল কিনারা হচ্ছিল না। এমতাবস্থায় গত ২০০৮ সালে বিশ্ব ইজতেমার সময় চলে আসে। ভাই আনোয়ার জানান,তার এলাকার বন্ধু ভাই শামীম তাকে ইজতেমায় যাওয়ার জন্য আহবান করে। তখন আমি কোন চিন্তা করে এক কথাতেই রাজি হয়ে যাই।  কোন কাজ নেই তে!। এলাকা থেকে জামায়াত বন্দী হয়ে টঙ্গীর ময়দানে তিন দিনের জন্য চলে যাই। আমার জীবনের এক স্বরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে টঙ্গীর ময়দানের সেই তিন দিন। মানুষ যে একমাত্র আল্লাহর জন্যই এমন নিবেদিত প্রাণ হতে পারে তা আমি সরাসরি দেখেছি ইজতেমার ময়দানে। ইজতেমায় থাকাকালীন এবং তার পরে বেশ কিছু দিন  আমার মনে এমন এক প্রশান্তি অনুভব করেছি যা আমি বলে বুঝাতে পারবো না। এমনটি আগে কখনও হয়নি।
যাই হোক, আমি নামাজে নিয়মিত হওয়ার চেষ্ট করে যাচ্ছিলাম এবং দ্বীন শেখার ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। কিছুদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসি। নামাজ কালাম সব বন্ধ হয়ে যায়। চাকরির পিছনে পিছনে ছুটছি কিন্তু চাকরি হবার কোন নাম নেই। আমার আবার অস্থির সময় ফিরে আসে। মন অবসন্ন থাকে । ভালো লাগে না কিছুই। একদিন ভাই শামীমের সঙ্গে অনেক দিন পরে দেখা হয়, তখন তিনি আমার অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিলেন। সব খুঁজ নিয়ে তিনি আমাকে বললেন, আনোয়ার তুমি না আমার সঙ্গে ইজতেমায় গিয়েছিলে, সেখানে মুরব্বীরা কী বলেছিল তুমি কি তা সব ভুলে গিয়েছ ? দীন শেখা এবং দীনের দাওয়াতের কাজ একনিষ্ঠভাবে ও ধারাবাহিকভাবে  না করলে এ কাজে তুমি কোন ভাল ফলাফল পাবে না। এক্ষেত্রে তোমার একান্ত ইচ্ছাই যথেষ্ট। সব কাজের ক্ষেত্রে অল্লাহর হুকুম ও রাসূল সা. তরিকা মতো করো এবং ধৈর্য ধারণ করো। ইনশাআল্লাহ  আল্লাহ তোমার সকল অবস্থা পরিবর্তন করে দিবেন । আল্লাহর জন্য হয়ে যাও, আল্লাহ চায় তো সব মুশকিল আসান করে দিবেন। ভাই শামীমের এ সব কথা শোনার পর আমার নিজেকে অনেক বেশি অপরাধী মনে হতে লাগলো। আমি কালবিলম্ব না করে পরের সপ্তাহেই তিন দিনের জামাতের জন্য বের হয়ে যাই। এরপর এক চিল্লার জন্য আল্লাহ আমাকে কবুল করেন। উত্তরাঞ্চলের বিভাগীয় শহর রংপুরে জীবনের প্রথম চিল্লা অতিবাহিত করি। এরপর থেকে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি দাওয়াতে তাবলিগির এ মেহনতের সঙ্গে সদা জড়িত থাকার জন্য। গত বছর আল্লাহর রহমতে তিন চিল্লা যাওয়ার সুযোগ হয়। আল্লাহর অনুগ্রহে  ছোটখাট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছি। তা দিয়ে আল্লাহ আমাকে ভালোই রাখছেন। জীবনের এ তরু ণ বয়সে আল্লাহ যে আমাকে তার দীন মোতাবেক জীবন পরিচালনার জন্য সহিহ বুঝ দান করেছেন এ জন্য তার শুকরিয়া জানিয়ে শেষ করতে পারবো না। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ইজতেমার ময়দানে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে,তাই সকলের কাছে এ গুনাহগারের দোয়া দরখাস্ত। আল্লাহ আমাদের এ কাজের আঞ্জাম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন, আমিন।

No comments: