get-fans-468x60
Showing posts with label সুস্থ পরিবার ও সমাজ গঠনে ইসলাম. Show all posts
Showing posts with label সুস্থ পরিবার ও সমাজ গঠনে ইসলাম. Show all posts

Thursday, May 26, 2011

সুস্থ পরিবার ও সমাজ গঠনে ইসলাম

সুস্থ পরিবার ও সমাজ গঠনে ইসলাম
সমাজের প্রাণকেন্দ্র হল পরিবারইসলামের দৃষ্টিতে পরিবার শুধু একটি উত্তমসামাজিক প্রতিষ্ঠানই নয়, বরং একটি পবিত্র সংস্থাপরিবারের সুখ, শান্তি এবংপারস্পরিক সম্পর্ক ছাড়াও রয়েছে একটি আইনগত ও সামাজিক দিকনৈতিক চরিত্র গঠনেরপ্রকৃষ্ট ক্ষেত্র হল পরিবারসামাজিক সম্পর্ক সৃষ্টি ও বৃদ্ধি হয় পরিবারকে কেন্দ্রকরেপবিত্র আল কোরআনে পারিবারিক সদস্যদের মুহসিনীন বা প্রাচীর ঘেরা দুর্গেঅবস্থানকারী সুরক্ষিত লোকজনের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছেইসলামে পরিবার শুধুস্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়পরিবারের পরিসর আরও ব্যাপকনিকটাত্মীয়স্বজনও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ততাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক, দয়া, করুণা এবংসহানুভূতি তো আছেই, বাড়তি দায়িত্বশীলতার প্রশ্নও জড়িতস্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পূর্ণসহযোগিতা ও স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধনের ওপর নির্ভর করে পারিবারিক জীবনের সুখ-শান্তিও সর্বাঙ্গীণ উন্নতি; স্বামী-স্ত্রী নিজ নিজ কর্তব্য পালন করে চললে পারিবারিকপরিবেশ অনেকাংশে সুখ ও শান্তিতে ভরে ওঠেইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় পরিবারই হল মানুষগড়ার মূল কেন্দ্র এবং সমাজ গঠনের প্রধান ভিত্তিএ জন্য পরিবার গড়ার ব্যাপারে ইসলামবিশেষভাবে যত্নবান হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে
আল্লাহতায়ালা দাম্পত্য জীবন গঠনেরপূর্বশর্ত হিসেবে স্বামীর জন্য বিবাহের আগে স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণের জোগানদেয়ার যোগ্যতা অর্জন করার কথা বলেছেনপারিবারিক জীবনে প্রবেশ করার আগেই একজনপুরুষের উচিত তার স্ত্রীর ও ভবিষ্যবংশধরদের ভরণপোষণ করার মতো আর্থিক সচ্ছলতাঅর্জন করামহান আল্লাহপাক বলেন- আর সন্তানের পিতার দায়িত্ব যথাবিধি তাদের (মা ওশিশুর) ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা’ (সূরা বাকারা, আয়াত-২৩৩)এ আয়াতের ব্যাখ্যায়মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ·) বলেন, এ আয়াত দ্বারা এ কথা বোঝানো হয়েছে, শিশুকেস্তন্যদান মাতার দায়িত্ব, আর মাতার ভরণপোষণ ও জীবন-ধারণের অন্যান্য দায়িত্ব বহনকরবে পিতাসূরা বাকারায় বলা হয়েছে, ‘মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুবছর দুধ পানকরাবেমাতা-পিতার ওপর সন্তানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হচ্ছে, একটি নির্দিষ্টবয়সে তার জন্য আলাদা শয়নের ব্যবস্থা করামহানবী (সা·) বলেন, ‘তোমাদের সন্তানদেরবয়স যখন সাত বছর হয়, তখন তোমরা তাদের নামাজের জন্য আদেশ করআর দশ বছর বয়স হলেতাদের নামাজের জন্য তাগিদ দেবে এবং তাদের বিছানা আলাদা করতে দেবে
হজরত লোকমান(·) নিজ পুত্রকে যে মূল্যবান উপদেশ দিয়েছেন পবিত্র কোরআনে তার উল্লেখ হয়েছেএভাবে- হে বস নামাজ কায়েম কর, কাজের আদেশ দাও, মন্দ কাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদেসবুর করনিশ্চয়ই এটি দৃঢ়তার কাজ। (সূরা লোকমান, আয়াত-১৭)শিশুরা নরম মাটির মতোশৈশবে যে মূল্যবোধ ও আদব আখলাকের পরিবেশে বেড়ে উঠবে, তাই পরবর্তী জীবনে স্থায়ী হয়েযায়এ কারণে পরিবার হচ্ছে শিশুর প্রথম বিদ্যালয়এ সময় মাতা-পিতা নিজেদের অনুসরণীয়ব্যক্তিত্ব দিয়ে এবং ধর্মীয় নির্দেশনার মাধ্যমে তাদের প্রতিপালন করবেনহজরত দয়ালনবী (দ·) বলেছেন, পিতা-মাতার ওপর সন্তানের অন্যতম অধিকার হচ্ছে, তাকে উত্তম শিক্ষাদেয়া এবং সুন্দর একটি নাম রাখা। (বায়হাকি শরিফ)ছোটবেলা থেকেই শিশুর শিক্ষারব্যবস্থা করতে হবেএটি মাতা-পিতার ওপর ফরজএই কর্তব্য পালন না করলে গুনাহগার হতেহবে এবং আখেরাতে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবেহজরত মহানবী (সা·) বলেছেন, দোলনাথেকে শিক্ষা শুরু করোতিনি মুসলিম শিশুকে দোলনায় দেখতে চেয়েছেনঅযত্ন-অবহেলায়ধুলাবালিতে নয়আর তাকে এ বয়স থেকেই আনন্দপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষার ব্যবস্থা করতেবলেছেনশিশুকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে লালন-পালনের সঙ্গে তার মননশীলতার বিকাশওপ্রয়োজনএ ক্ষেত্রে অভিভাবককে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারমধ্যে মিথ্যা বলা, নাপাক থাকা, নামাজ না পড়া ইত্যাদি বিষয়গুলো না থাকেএ জন্য চাইসহায়ক পরিবেশপ্রিয়নবী (সা·) শিশুদের জ্ঞানদানের কথা বলেই ক্ষান্ত হননি, বরং তাদেরসাঁতার কাটা, এমনকি তীর চালানো পর্যন্ত শিক্ষা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন
ইসলামবলেছে, তুমি আয় বুঝে ব্যয় করদারিদ্র্য যেমন ইসলাম কামনা করে না, অনুরূপভাবেইসলামে বাহুল্য বর্জনের নির্দেশও রয়েছেকারণ সীমাহীন দারিদ্র্য অনেক ক্ষেত্রেমানুষকে কুফরির পথে ধাবিত করে, আবার সীমাহীন প্রাচুর্য আর অপরিকল্পিত সন্তান-সন্ততিও পারিবারিক সদস্য বৃদ্ধি পরিবারে অশান্তি ডেকে আনেঅনেক ক্ষেত্রে মানুষকে সত্য ওন্যায়ের পথ থেকে বিপথগামী করেহজরত নূরনবী (দ·) বলেছেন- তোমাদের প্রত্যেককেই একএকজন দায়িত্বশীল এবং সবাই তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হতে হবেপুরুষ তারগৃহে দায়িত্বশীল, এ জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবেঅনুরূপভাবে নারী তার স্বামীগৃহেএকজন দায়িত্বশীল এবং দায়িত্বের ব্যাপারে তাকে জবাবদিহি করতে হবে’ (বুখারি ও মুসলিমশরিফ)তাই ইসলামী ঐতিহ্য রক্ষা ও বরকতময় পারিবারিক পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেচাইলে আমাদের কতিপয় বিষয়ের প্রতি যত্নবান হতে হবে; · স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য ওপারিবারিক জ্ঞান ২· এক্ষেত্রে তাদের বয়সের সমতা ৩· আর্থিক সামর্থø · পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি সবার পরিচ্ছন্নতা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ ৫· ইসলাম প্রবর্তিতউন্নততর ধারণা প্রয়োগ করা ইত্যাদি
যুগান্তর, ১১ এপ্রিল ২০০৮