get-fans-468x60

Wednesday, June 3, 2015

১০টি বিষয় নিজের অজান্তেই আপনাকে নিয়ে যাবে ডিভোর্সের দিকে!

১০টি বিষয় নিজের অজান্তেই আপনাকে নিয়ে যাবে ডিভোর্সের দিকে!

বিবাহ বিচ্ছেদের হার পৃথিবী জুড়েই বেড়ে চলেছে। এমন নয় যে বিয়ে ভাঙার পর কেউ আনন্দিত হয় বা কারো কষ্ট কম হয়। বরং একটি ডিভোর্স মানে দুটি মানুষেরই পরাজয়, দুজনেরই কষ্ট। দুটি মানুষ যখন নিজেদের দাম্পত্যকে ধরে রাখতে পারেন না, তখনই আসে এই ভাঙন। দিন যাপনের ভিড়ে আমরা বুঝতেও পারি না যে কিছু বিষয় তিল তিল করে আমাদের টেনে নিয়ে যায় ডিভোর্সের দিকে। চলুন, আজ চিনে নিই সেই ১০টি বিষয়কে, যেগুলো অজান্তেই ঠেলে দেয় ডিভোর্সের দিকে।
১) দম্পতিদের মাঝে সবচাইতে বড় দূরত্ব নিয়ে আসে পরস্পরের জন্য সময়ের অভাব। সংসার, সন্তান, পরিবার, অফিস সবকিছু সামলে নিচ্ছে আপনারা। কিন্তু পরস্পরকে সময় কি দিচ্ছেন? এসব দাম্পত্যের অংশ বটে, কিন্তু মূল বিষয় পরস্পরকে একান্ত সময় দেয়া।
২) অর্থের অভাব কিংবা খুব বেশী অর্থ, দুটিই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে দাম্পত্যকে ঠেলে দেয় ডিভোর্সের দিকে। এই দুটিই ভালোবাসা নষ্ট করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
৩) এই কথা কেউ স্বীকার করুক বা নাই করুন, দুটি মানুষের দাম্পত্য সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়ার জন্য পরিবারের অন্যদের নাক গলানোই যথেষ্ট। মা, বাবা, ভাই, বোন অবশ্যই জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তারপরেও নিজের দাম্পত্যে তাঁদেরকে কথা বলতে দেয়া একেবারেই অনুচিত। বিশেষ করে পুরুষেরা এই ভুল খুব বেশী করে থাকেন।
৪) দাম্পত্য একটি দুজনের সম্পর্ক, তাই গুরুত্ব দিতে হবে দুজনেরই চাওয়া পাওয়াকে। একলা থাকতে যারা ভালোবাসেন, তাঁদের উচিতই নয় বিয়ে করা। আত্ম কেন্দ্রিক আর স্বার্থপর হয়ে কেবল কষ্টই ডেকে আনে।
৫) সম্পর্কে আন্তরিকতার ভাব খুব সহজেই আপনাকে ডিভোর্সের দিকে ঠেলে দেয়। মানুষ বিয়েই করেন পাশে একজন সঙ্গী পাওয়ার জন্য, ভালোবাসার জন্য।
৬) সন্তান না হওয়া, সময়ের আগে বা পরিবারের চাপে সন্তান নেয়া ইত্যাদি সব কিছুই দাম্পত্য সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে পারে। আবার সন্তানের জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে নিজের সঙ্গীকে অবহেলা করাও সম্পর্ক ভাঙার মূল কারণ। বিশেষ করে নারীরা এই ভুলটি খুব করেন।
৭) নেশাদ্রব্যের প্রতি আসক্তি সংসার তো ভাঙতেই পারে। এছাড়াও পরনারী বা পুরুষের প্রতি অতি আগ্রহ, পর্ণগ্রাফি আসক্তি ইত্যাদিও সংসার ভাঙা তথা ডিভোর্সের জন্য দায়ী হয়ে থাকে।
৮) পরস্পরকে শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতন করা কোনভাবেই শান্তি আনে না জীবনে। ভালোবাসার জন্য দাম্পত্য, নির্যাতনের জন্য নয়।
৯) পরস্পরের মতের ও আদর্শের অমিল যদি দীর্ঘদিন ধরে চলতেই থাকে, তাহলে ভাঙন অনিবার্য।
১০) মানুন আর নাই মানুন, বন্ধুরা সংসারে অশান্তি তৈরি তথা ডিভোর্সের জন্য অনেক ভাবেই দায়ী। বন্ধুদের অতিরিক্ত সময় দেয়া, স্বামী বা স্ত্রীর সাথে বন্ধুর পরকীয়া, বন্ধুর ভুল পরামর্শে নিজের সংসারে অশান্তি, প্রতারণা বা ছলনার শিকার হওয়া ইত্যাদি খুব সাধারণ বিষয়। অহরহই ঘটছে।

সূত্র- 10 things that could lead to divorce in your life- familyshare.com

বিয়ে পরবর্তী স্ত্রীর সাথে স্বামীর ব্যবহার


বিয়ের পর স্বামী ও স্ত্রী উভয়েরই পরস্পরের প্রতি পরস্পরের অনেক দায়িত্ব
ও কর্তব্য রয়েছে।
এর সবটাই ইহ জীবনের ও পর জীবনের সুখ শান্তি অর্জনের লক্ষে শরীআত কতৃর্ক
নির্ধারিত সুন্দর ব্যবস্থা ।
প্রত্যেক বিবেকবান স্বামীকে খেয়াল রাখতে হবে যে দু জনের ৬০/৭০ বছরের এক সফর
শুরু হল।
শরীআতের মাসআলা এই যে পাঁচ জনে মিলে যদি এক ঘন্টার সফর করে,
তবে একজন কে আমির বানিয়ে নাও।
এখানে তো দীর্ঘ দিনের সফর,কাজেই একজনকে নেতৃত্ব দেয়া প্রয়োজন।
শরীআতে স্বামীকে আমীরের আসন দিতে বলা হয়েছে যে, তোমরা বিবি হল মামুর
এবং আমীর সম্পর্কে বলা হয়েছে সাইয়ি্যদুল কওমী খাদিমুহুম:যিনি আমীর হবেন
তিনি মানুষের খিদমত করবেন।
অর্থাৎ স্বামীকে কৃর্তত্ব দোয়ার দ্বারা নিরস্কুর আধিপত্য বিস্তারের কোনো সুযোগ দেওয়া
হয় না ।
বরং স্ত্রী সন্তান সন্ততি খিদমত ও সেবার পূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয় তার উপরে।
শরী আতের অন্য একটা দৃষ্টি ভঙ্গিতে বলা যায় যে, স্বামী হল আশীক আর স্ত্রী তার
মাহবুবা। দুনিয়ার নিয়ম তো এটায় যে আশিক তার মাশুক কে সর্বদা আরাম পৌছানোর
চেষ্টা করবে।
কাজেই স্বামী তার স্ত্রী কে সাধ্যমত আরাম পৌছানোর চেষ্টা করবে।
আল্লাহ্‌ পাক স্বামীকে উদ্দেশ্য করে আদেশ দিচ্ছেন যে দেখো আমার এই বান্দীকে
আমি সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমি নিজের হাতে একে তোমার জন্য নির্ধারিত করেছি।
কাজেই তুমি একে আমার দেয়া নেয়ামত মনে করে এর সাথে কোমল ব্যাবহার করো।
এর দোষ ক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখ।
কোরআন কারীমে বলা হয়েছেঃ তোমরা বিবিদের সাথে উত্তম ব্যাবহার করো।
একটা উদাহরন দিলে বিষয় টা পরিস্কার হবে।
এক লোকের কাছে পুলিশ সুপার ফোন করে বলেছে যে ভাই শুনলাম আমার মেয়ের
বান্ধবী কে নাকি তুমি বিয়ে করেছ।
ওদের দুই বান্ধবীর মধ্যে অসাধারন মুহাব্বত।
সুতরাং তুমি তোমার বিবির দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রেখো, যাতে কোন অসুবিধা
না হয়।
এই ফোন পাওয়ার পর সে লোক সর্তক হয়ে যাবে।
পূর্বের চেয়ে এখন আরো বেশি ভালো ব্যাবহার করবে এবং স্ত্রীর সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে
উদ্যাগী হবে।
সামান্য তম জুলুম অত্যাচারের কল্পনাও তার দিলে আসবেনা।
সামান্য একজন পুলিশের কথাতে যদি এমন নিষ্ঠা বান হয়ে যাই ,
তা হলে মহা প্রতাপ শালী মহান আল্লাহর নির্দেশে আমাদের করনীয় , তা সহজেই
অনুমেয়।
আকাবিরে দেওবন্দের একজন মুরুব্বীর কাছে এক লোক ,অভিযোগ করল যে,
আমার স্ত্রী আমাকে খুব পেরেশান করেছে, এখন আমি তাকে তালাক দিতে চাই।
উত্তরে তিনি বললেন, দেখো, সে যদি তোমাকে কষ্ট দেয় টা হলে শোনঃ
এই মহিলারা অনেক লোক কে আল্লাহর অলি বানিয়ে দিয়েছে।
যদি তুমি আল্লাহর অল হতে চাও, তো সবর কর, আর যদি না চাও তা হলে
তালাক দিয়ে দাও।
হরযত মির্জা জানেজানী (রহঃ) বড় উচ্চ স্তরের বুজুর্গ ছিলেন।
একদিন তাকে স্বপ্নে বলা হল যে, দিল্লীর অমুক বস্তিতে খুব দ্বীনদার এক মহিলা আছে,
কিন্তু সে খুব বদ মেজাজী।
তুমি যদি তাকে বিয়ে করে বদ মেজাজীর উপর সবর করতে পারো,
তা হলে আমি তোমাকে আমার অলি বানিয়ে নিব।
সুতরাং পর দিন তিনি ঐ মেয়েকে বিয়ে করে আনলেন এবং তিনি তার শিষ্যদের কে বলতেন যে ,
দেখো,আল্লাহ্‌ তাআলা যে সারা বিশ্বে মির্জার ঢংকা বাজিয়ে দিয়েছেনঃতা এই
মুজাহাদার কারণেই।
শাইখ আবুল হাসান খোরসানীও অনেক বড় আল্লাহর অলি ছিলেন।
একদিন এক লোক দেখল যে, তিনি একটা সাপ দিয়ে লাকড়ির বোঝা বেঁধে তা
কাঁধে করে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়ে আসছেন।
লোক টি অবাক হয়ে এর মর্ম জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে, এটা তার বদ মেজাজী
স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যাবহার এর পুরুস্কার।
স্ত্রীর প্রতি উত্তম ব্যাবহারের জন্য শরীআতে এভাবে স্বামীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঠিক তদ্রপ স্ত্রীকে ও নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে সে যেন স্বামীকে পেরেশান না করে
তার সামর্থের বাইরে তার দরাসূলুল্লাহ -দাওয়া করে হয়রান না করে।
বরং সে তার স্বামীর আরামের দিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখবে।
যে স্ত্রীর উপর তার স্বামী অসন্তুষ্ট থাকে,তার ইবাদত কবুল হয় না এবং ফেরেস্তারা তার
উপর স্বামীকে সন্তুষ্ট না করা পর্যন্ত লানত করতে থাকে।
স্বামীর গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন যে , আমার শরীয়াতে যদি
আল্লাহ্‌ ব্যতিত অন্য কাউকে সিজদা করার অনুমতি থাকতো,
তা হলে মহিলাদের কে তাদের স্বামীকে সিজদা করার নির্দেশ দেয়া হতো।
নারীদের জন্য জান্নাতে যাওয়া পুরুষদের তুলনায় সহজ।
কোন মহিলা যদি নিন্মোক্ত ৪ টি কাজ ঠিক কত করে, তা হলে আখিরাতে তাকে
জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে।

(১) পাঁচ ওয়াক্ত নামায সঠিক ভাবে আদায় করবে।
(
২)রমজানে রোযা রাখবে।
(
৩)স্বামীকে শরীয়াতের গণ্ডির মধ্যে থেকে খুশী রাখবে।
(
৪) পর্দার সাথে থেকে নিজের ইজ্জত আব্রুর হিফাযত করবে।
এ ৪ টি কোন টি ই অসম্ভব বা কঠিন কাজ নয়।
কাজেই প্রত্যেক নারীর উচিৎ নিজ নিজ অবস্থান জান্নাত নিশ্চিত করা।

সৃষ্টি জগত নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে মুসলমান হলেন কানাডার কুরাত

সৃষ্টি জগত নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে মুসলমান হলেন কানাডার কুরাত

সৃষ্টি জগত নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে মুসলমান হলেন কানাডার কুরাত
ইসলামের রয়েছে এমন অনেক দিক বা বৈশিষ্ট্য যার যে কোনো একটি দিক মানুষের মধ্যে সত্য সম্পর্কে গবেষণার জন্য জোরালো উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে সক্ষম। যেমন, সৃষ্টি জগতের নানা দিক নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে গিয়ে এক আল্লাহর অস্তিত্বকে বুঝতে সক্ষম হন কানাডার নাগরিক কুরাত। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, 'অপূর্ব অবারিত আকাশ, সুবিশাল ভূমি, বিস্ময়-জাগানো জ্বলজ্বলে তারকারাজি-এইসব মনোহর সৃষ্টি মানুষকে স্রস্টা সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য করে। আর  তাই আমি সব সময়ই ভাবতাম এই বিশ্বজগতের কোনো স্রস্টা না থেকে পারে না। প্রকৃতির রহস্যময় নানা বিষয়কে সহজেই এড়িয়ে যেতে পারিনি। তাই সব সময়ই ধর্মগুলোর বাস্তবতা সম্পর্কে গবেষণার কথা ভাবতাম যাতে বিস্ময়কর এই বিশ্বজগতের বাস্তবতাগুলো বুঝতে সক্ষম হই।'
  
কানাডার নাগরিক কুরাত আরো জানিয়েছেন,

তিনি খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন বলে স্রস্টা বা খোদা সম্পর্কে খ্রিস্টানদের বিশ্বাসকে অন্ধের মত মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলেন না। খ্রিস্ট ধর্মের লক্ষ্য ও ভিত্তিও তার কাছে স্পষ্ট বলে মনে হয়নি। বাপদাদার এই ধর্মে তিন জন খোদার যে কথা বলা হয়েছে তা কুরাতের কাছে অযৌক্তিক বলে মনে হয়েছে। তার মতে, একাধিক খোদা বিশ্ব-পরিচালনা করলে তাতে গোলযোগ দেখা দিত। এইসব বিষয়ে খ্রিস্ট ধর্মের পুরোহিতদের সঙ্গে আলোচনা কুরাতের সন্দেহগুলো নিরসন করতে পারেনি, বরং সন্দেহগুলো আরো গভীর হয়েছে। ফলে মানসিক প্রশান্তি অর্জনের জন্য তিনি খ্রিস্ট ধর্মের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন এবং ইহুদি ধর্ম নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।

ইসলাম কোনো বিশেষ জাতির ধর্ম নয়। এ ধর্ম বিশ্বজনীন বা গোটা মানব জাতির  ধর্ম। অন্যদিকে ইহুদি ধর্ম কেবল বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের ধর্ম। জন্মগতভাবে বা জাতিগতভাবে ইহুদি নয় এমন কেউ ইহুদি হতে পারে না।

যাই হোক, কানাডার নাগরিক কুরাত খ্রিস্ট ধর্ম সম্পর্কে গবেষণার পর ইহুদি ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা করেন। গবেষণার ফল সম্পর্কে তিনি বলেছেন:

'ইহুদি ধর্মেও আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে কিছু চমক দেখা যায়। কিন্তু তৃষ্ণার্ত ব্যক্তিদের হৃদয়গুলোকে তৃপ্ত করার জন্য সেসব যথেষ্ট নয়। ইহুদি ধর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত পড়াশুনার পর বুঝতে পারলাম যে, তারা জাতি হিসেবে নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ ও আল্লাহর মনোনীত জাতি বলে মনে করে। তাদের দৃষ্টিতে অ-ইহুদি জাতিগুলোকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন ইহুদিদের সেবার জন্যই। ইহুদিদের দৃষ্টিতে খোদা বা স্রস্টা একমাত্র তাদেরই সম্পদ, পুরো মানবজাতির জন্য নয়। সুস্থ-বিবেক কখনও এ ধরনের দাবি মেনে নিতে পারে না। এভাবে আমি যেসব বাস্তবতা বা সত্যের সন্ধান করছিলাম তার কোনো চিহ্নই খুঁজে পেলাম না ইহুদি ধর্মে।' 

খ্রিস্ট ও ইহুদি ধর্ম নিয়ে ব্যাপক গবেষণার পর তাতে পরিতৃপ্ত না হয়ে কানাডার নাগরিক কুরাত ইসলাম সম্পর্কেও গবেষণার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পশ্চিমা প্রচার মাধ্যমগুলো ইসলাম সম্পর্কে ব্যাপক কুৎসা রটনা করে রাখায় এ ব্যাপারে অগ্রসর হওয়াটা তার জন্য ছিল প্রায় অসম্ভব। কিন্তু ইসলামী জ্ঞানের বৃহত্তম উৎস হিসেবে পবিত্র কুরআন পড়ার পর কুরাত যেন এ গ্রন্থের মধ্যে নিজের হারানো সত্তাসহ যা কিছু খুঁজছিলেন বহু বছর ধরে তার সবই খুঁজে পান। তার ভাষায়: 'কুরআনের প্রতিটি আয়াত আমার বিক্ষুব্ধ মনে যোগাতো প্রশান্তি'।

পবিত্র কুরআন এমন এক মহাগ্রন্থ যা প্রতিদিন কেবল কোটি কোটি মুসলমানই পাঠ করেন তা নয়, বরং বহু মুসলমানের জন্যও গবেষণা-কর্মের এক অনন্য উৎস। ফরাসি চিন্তাবিদ জোয়েল লাবুমের মতে কুরআন এক চিরজীবন্ত গ্রন্থ। গবেষক ও জ্ঞানীরা তাদের বুদ্ধি ও অনুধাবন ক্ষমতার আলোকে এই মহাগ্রন্থ থেকে উপকৃত হচ্ছেন। কুরআনের সৌন্দর্য অভিভূত করে কানাডার নাগরিক কুরাতকে। তার মতে, কুরআন বিশ্বজগতের নিরঙ্কুশ বা একক পরিচালকের কথা তুলে ধরে। এর বাণী মানুষের বাণী নয়। এ পবিত্র ধর্মে মানুষ সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং এ জন্য পুরোহিতের দরকার হয় না। কুরআন হযরত ঈসা ও মুসা (আ.) প্রমুখ নবীদের কথা বলে এবং তাঁদেরকে আল্লাহর এমন রাসূল হিসেবে বর্ণনা করেছে যারা মানুষকে এক আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহ্বান জানাতেন। কুরআনে এমন কোনো আয়াত নেই যেখানে সন্ত্রাস বা সহিংসতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, অথচ পশ্চিমা প্রচার মাধ্যমগুলো মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী বলে প্রচার করছে। কুরাত বরং ইসলামকে শান্তি, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের ধর্ম হিসেবে দেখতে পেয়েছেন এবং তিনি ব্যাপক গবেষণার পর  এই ধর্মকেই সবচেয়ে পরিপূর্ণ ধর্ম হিসেবে সনাক্ত করতে পেরেছেন।

ইসলাম সম্পর্কে জানার পর কানাডার নাগরিক কুরাত মুসলমানদের সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি জানান, মুসলমানদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বুঝতে পারেন যে এর আগে তিনি কখনও এমন ভদ্র, বিনম্র ও দয়ার্দ্র মানুষ দেখেননি। কুরাত বলেছেন: তারা হাসিমুখে আমাকে স্বাগত: জানান এবং গভীর ধৈর্য নিয়ে আমার সঙ্গে মত বিনিময় করেন।

এরপর কুরাত আরো অনেক মুসলমানের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি মুসলমানদের একটি মসজিদেও যান। মসজিদে ঢোকার সময় প্রথমে কিছুটা ভীত ছিলেন। কারণ, এর আগে তিনি কখনও মসজিদে যাননি। কিন্তু মুসলমানদের সহাস্য অভ্যর্থনায় তার সব ভয় দূর হয়ে যায়। ফলে মুসলমানদের সহিষ্ণুতা ও দয়া সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত হন। কুরাত এটাও লক্ষ্য করেন যে, মুসলমানরা পরস্পরকে ভাই বলে ডাকেন এবং সৎকর্মে একে অপরকে সাহায্য করেন ও মন্দ কাজ করেন না। কুরাত ইসলামের যেসব দোষ-ত্রুটি তুলে ধরার চেষ্টা করছিলেন মুসলমানদের কাছে সেসবের যৌক্তিক জবাব পেয়ে যান। ধীরে ধীরে কুরাত বুঝতে পারেন যে একমাত্র ইসলামই মানুষের জীবনের জন্য বয়ে আনতে পারে সৌভাগ্য। এরপর পবিত্র রমজান মাসে একটি মসজিদে গিয়ে তিনি কলেমায়ে শাহাদাতাইন পাঠ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা দেন।

কানাডীয় নও-মুসলিম কুরাত সেই রমজান মাসেই নামাজ ও রোজা আদায় শুরু করেন। আর এটাকে তিনি তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় রহমত বলে মনে করেন। কারণ, তিনি মুসলমানদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ইবাদতের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পান রমজান মাসে মুসলমান হওয়ার সুবাদেই। প্রথমে ইসলামী বিধি-বিধানগুলো মেনে চলা একটু কষ্টকর মনে হলেও পরে সেসব তার কাছে সহজ হয়ে যায়। ইসলামী বিধি-বিধান ও মুসলমানদের সমাজবদ্ধ জীবন তার জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে বলে কুরাত উল্লেখ করেন।

নও-মুসলিম কুরাত মুসলমান হওয়ার পর মনে করেন যে, তার জীবনের রয়েছে লক্ষ্য। তিনি এখন মনে করেন যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই সবচেয়ে আনন্দদায়ক বিষয়। ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর হওয়ার অভিজ্ঞতার আলোকে কুরাত মনে করেন কোনো বিষয়ে কিছু শোনার পর সে সম্পর্কে গবেষণা চালানোর পরই রায় দেয়া উচিত। তার মতে, সব সময়ই আল্লাহর কাছ থেকে পথ-নির্দেশনা চাওয়া উচিত এবং আল্লাহর সঙ্গেই হওয়া উচিত মানুষের মূল সম্পর্ক। আর তা হওয়া উচিত শক্তিশালী ও স্থায়ী।   কানাডীয় নও-মুসলিম কুরাত বলেছেন:

'আমি জানি না, আমি ইসলামকে খুঁজে পেয়েছি, না ইসলাম আমাকে খুঁজে পেয়েছে। কিন্তু যারা স্রস্টার সত্যিকারের পরিচয় ও সত্য সম্পর্কে জানতে চায় আল্লাহ অবশ্যই তাদের পথ দেখান। তাই আল্লাহর ওপর ঈমান রাখবেন ও তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সব ধরনের কষ্ট ও তিরস্কার বা নির্যাতন সহ্য করুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দয়া করবেন ও একদিন সবাইকেই ইসলামের সত্যতার সঙ্গে পরিচিত করবেন-এই মুনাজাত করছি।'#

মাধ্যম


‘ইসলামেই পেয়েছি আমার প্রকৃত সত্ত্বা’ মার্কিন নওমুসলিম সারা ট্রাস

‘ইসলামেই পেয়েছি আমার প্রকৃত সত্ত্বা’ মার্কিন নওমুসলিম সারা ট্রাস

‘ইসলামেই পেয়েছি আমার প্রকৃত সত্ত্বা’ মার্কিন নওমুসলিম সারা ট্রাস
২৯ বছর বয়স্ক সারা ট্রাস ছিলেন একজন চিকিৎসক। তিনি ও তার বাবা ছিলেন খ্রিস্টান। আর মা ছিলেন ইহুদি। ট্রাস ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগের কথা তুলে ধরে বলেছেন: 'আমি কৈশোরেই ইসলাম সম্পর্কে কিছু না জানা সত্ত্বেও উৎসব অনুষ্ঠানগুলোতে শালীন পোশাক পরার চেষ্টা করতাম। কারণ, তাতে আমি প্রশান্তি পেতাম। সে সময় পর্যন্ত কখনও কোনো মুসলমানকে কাছ থেকে দেখিনি। আর ইসলাম সম্পর্কেও তেমন কিছুই জানতাম না। আশপাশের লোকদের কাছ থেকে কেবল এটা শুনেছিলাম যে ইসলাম নারীদের সঙ্গে সহিংস আচরণ করে। মুসলমানদের কাছে নারী হল দাসী-বাঁদীর মত। কিন্তু ব্যাপক গবেষণার পর এখন এটা বুঝতে পেরেছি যে এ সম্পর্কে আমি যা শুনেছিলাম তা ছিল ভুল। আমি সৌভাগ্যবান যে সত্যকে জানতে পেরেছি।'

কৈশোরেই ধর্ম সম্পর্কে সারার আগ্রহ ছিল ক্রমবর্ধমান। ধর্ম সম্পর্কে নানা প্রশ্ন ও অস্পষ্টতা  তার জীবনের এক বড় উৎকণ্ঠা হয়ে দাঁড়ায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন:

'আমার ও সব মানুষের প্রকৃতিই হল খোদায়ী। তাই সব মানুষের মধ্যেই রয়েছে ধর্মের প্রতি আকর্ষণ। আসলে ধর্ম ও আল্লাহতে বিশ্বাস হচ্ছে মানুষের এমন এক চাহিদা যা মানুষকে দেয় নিরাপত্তা ও প্রশান্তি। তাই প্রকৃতিগত এই চাহিদা পূরণের জন্য চেষ্টা করতাম। আর এ জন্য নানা ধর্ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতাম। কিন্তু যতই জানার চেষ্টা করতাম ততই প্রশ্ন ও অস্পষ্টতা বাড়তেই থাকে।' 

সারা ট্রাস তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের প্রাথমিক আগ্রহের উন্মেষ প্রসঙ্গে বলেছেন: 'আমার আশপাশে কোনো মুসলমান ছিল না। এমন কেউ ছিল না যিনি ইসলাম সম্পর্কে আমার মনে আগ্রহের আলো জ্বেলে দিতে পারেন ও ইসলামের পরিচয় তুলে ধরতে পারেন। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলাম সেখানে নানা ধর্মের অনুসারীদের দেখতে পেতাম। বিষয়টা আমার কাছে ছিল বেশ আকর্ষণীয়। তাদের কারো কারো সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তাদের আচার-আচরণ এবং দৃষ্টিভঙ্গি বা মন-মানসিকতায় আমি অভিভূত হই। বিশেষ করে, এক ব্যক্তির আচার-আচরণ ও মন-মানসিকতা আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। তিনি ছিলেন অন্যদের চেয়ে ভিন্ন ধরনের। তার ইবাদত-বন্দেগি, খোদাভীতি, সততা ও চারিত্রিক পবিত্রতা আমাকে বেশ আকৃষ্ট করে।'

মার্কিন নও-মুসলিম সারা ট্রাস এ প্রসঙ্গে আরো বলেছেন:
'অবশ্য আমি ও অন্য কেউই জানতাম না যে তিনি ছিলেন মুসলমান। তার আচার-আচরণ আমার কাছে ছিল আদর্শ স্থানীয়। যখন বুঝলাম যে তিনি মুসলমান তখন অনেকেই তার কাছ থেকে আমাকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু আমি এর পেছনে কোনো যুক্তি দেখলাম না। কারণ, তিনি ছিলেন সেই সময় পর্যন্ত আমার দেখা লোকদের মধ্যে অন্য সবার চেয়ে পবিত্র ও সর্বোত্তম। আমি তাকে তার কোনো কোনো বিশেষ চিন্তা-ভাবনা ও আচরণ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি জানান যে ধর্মই এর কারণ। তার কথাবার্তা ও আচার-আচরণ ইসলাম সম্পর্কে আমার এতদিনের ভুল ধারণা ভেঙ্গে দেয়। আমি তার কাছে ইসলাম সম্পর্কে জানানোর অনুরোধ করি এবং এভাবেই ইসলামের সঙ্গে গভীরভাবে পরিচিত হই।'
মার্কিন নও-মুসলিম সারা ট্রাস আরো বলেছেন:  'ইসলাম এমন এক ধর্ম যা মানুষের প্রকৃতির সঙ্গে মানানসই। কেউ যদি প্রকৃত অর্থেই সত্যের সন্ধান করেন মহান আল্লাহ তাকে পথ দেখাবেন। ঠিক যেমনটি আমি মহান আল্লাহর দয়ায় ইসলামের মধ্যেই আমার প্রকৃত সত্ত্বাকে খুঁজে পেয়েছি, যা হারিয়ে গিয়েছিল।'

ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্তের কারণে কখনও অনুতপ্ত হয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সারা ট্রাস দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, না তিনি কখনও তা অনুভব করেননি, বরং ইসলাম গ্রহণের পর নবজন্মের অনুভূতি ও প্রশান্তি লাভ করেছেন তিনি। এখন নতুন করে আল্লাহর অসন্তুষ্টি জাগানোর ভয় ছাড়া কোনো ভয় তার মধ্যে নেই। সারা আরো জানান, পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াতও তাকে প্রশান্তি দেয়। কারণ, কুরআন তার প্রশ্নগুলোর জবাব দেয় এবং তাকে ইসলামের আরো কাছে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, ইউরোপ-আমেরিকায় খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ইসলাম। বিশেষ করে সেখানকার নারী সমাজ ব্যাপক হারে আকৃষ্ট হচ্ছে এ ধর্মের দিকে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন পশ্চিমে আধ্যাত্মিক শূন্যতা, আত্মপরিচয়হীনতা ও নৈতিক অধঃপতনের প্রতি বিতৃষ্ণার কারণেই ইসলামের দিকে ঝুঁকছেন সেখানকার জনগণ। নারীরা যত্ন, সম্মান ও সুরক্ষার মত যা যা পছন্দ করেন ইসলামের মধ্যে তা পাচ্ছেন বলেও এই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। নারী ও পুরুষের বৈশিষ্ট্য যে ভিন্ন- ইসলামে এর স্বীকৃতি এবং এ ধর্মে পরিবার ও মায়ের প্রতি অফুরন্ত সম্মানও পশ্চিমা নারীদের মন জয় করছে।

 পশ্চিমা নারীরা ক্রমেই এটাও বুঝতে পারছেন যে পাশ্চাত্য নারীকে একটি পণ্য হিসেবে দেখে থাকে। তাই মর্যাদাহীন এই জীবনের মোকাবেলায় ইসলামের হিজাব, শালীনতা ও আধ্যাত্মিকতা তাদেরকে দিচ্ছে সার্বিক নিরাপত্তার সুদৃঢ় আশ্রয়।

শহীদ অধ্যাপক আয়াতুল্লাহ মুর্তাজা মুতাহহারির মতে ইসলাম নারী ও পুরুষের সৃষ্টিশীলতা বা প্রতিভা বিকাশের ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্র সম্পর্কে সচেতন। নারী ও পুরুষের সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং পবিত্র ও যৌক্তিক সম্পর্ক সমাজকে সব ধরনের বিচ্যুতি আর প্রবৃত্তি-পূজা থেকে রক্ষার মাধ্যমে তাদেরকে দেয় প্রকৃত সৌভাগ্য।

মার্কিন নও-মুসলিম সারা ট্রাস ঘরের বাইরে হিজাব পরে বের হন। তার মতে, ইসলাম তার সামাজিক তৎপরতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি, বরং তিনি এখনও তার পছন্দের কাজগুলো হিজাব পরে অব্যাহত রাখছেন। সারা মনে করেন হিজাব মানুষের আত্মিক পবিত্রতা ও সমাজকে অধঃপতন থেকে রক্ষার মাধ্যম। অথচ  তার মতে এটা খুবই লজ্জাজনক যে পশ্চিমা সমাজপতিদের অনেকেই এমন একটি জরুরি বা অপরিহার্য বাস্তবতাকে অন্ধের মত চোখ বুজে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছেন। ট্রাস আরো বলেছেন:

'কখনও এটা ভাবিনি যে একদিন মুসলমান হব। এখন এটা বুঝি যে মুসলমানদের সম্পর্কে আমার আগের ধারণা ছিল পুরোপুরি ভুল। পশ্চিমা গণমাধ্যমের কারণেই এ ধরনের ভুল ধারণা জন্মেছিল আমার মধ্যে। সে সময় পর্যন্ত পশ্চিমা গণমাধ্যম যা-ই বলতো আমি তাই বিশ্বাস করতাম। যে মুসলমানদের আমি পছন্দ করতাম না একদিন সেই মুসলিম সমাজেরই সদস্য হব তা কখনও ভাবিনি। কিন্তু আজ মুসলমান হতে পারার জন্য আমি গর্বিত এবং এ জন্য আমি খুবই আনন্দিত।' #

মাধ্যম